শতকোটি টাকার মান্দা-নিয়ামতপুর-পোরশা সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে সম্বুক গতি
কিউ, এম, সাঈদ টিটো, পিবিসি নিউজ, নওগাঁ : নওগাঁর মান্দা-নিয়ামতপুর-শিবপুর-পোরশা পাকাসড়ক প্রশস্তকরণের কাজ চলছে সম্বুক গতিতে। টেন্ডারের নির্ধারিত সময় পার হয়েছে প্রায় ৮ মাস। কিন্তু কাজ শেষ হয়নি অর্ধেকের বেশি। রাস্তার কার্পেটিং তুলে ফেলায় দীর্ঘ রাস্তাটি এখন যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। চলাচলে দারুন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এলাকার মানুষ। কর্তৃপক্ষ বলছেন করোনার কারণে এই অবস্থা। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নানা অনিয়মেরও অভিযোগ করা হয়েছে।
অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি ছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। চার বছর আগে এটিকে সড়ক ও জনপদ বিভাগে ন্যস্ত করা হয়। গত ২০১৮ সালে এটি সংস্কার ও প্রশস্তকরণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এজন্য বরাদ্দ করা হয় ৮৭ কোটি ৩৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই প্রকল্পটির কার্যাদেশ দেয়া হয় ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন এক্সপেকটা (জেভি) নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। কাজ শেষ করার সময়সীমা ছিল গতবছর ৩০ জুন পর্যন্ত।
২৬ কিলোমিটার সড়কে ৩১টি কালভার্ট ও তিনটি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু অন্যকাজ ৪০ ভাগও সম্পন্ন হয়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় ঠিকাদার একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করে যাচ্ছেন কর্তৃপক্ষের কাছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের কার্পেটিং তুলে তার উপর রোলার করে ফেলে রাখা হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে স্থানে স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গত ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সংস্কার কাজ। সম্প্রতি সড়কটি পরিদর্শন করে এলাকার এমপি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর নির্দেশে ঠিকাদার কিছু কাজ করেন। নিয়ামতপুর
উপজেলা সদর থেকে টিএলবি মোড় পর্যন্ত মাত্র ৫ কিলোমিটার রাস্তায় রোলার দিয়ে, পানি দিয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে বিটুমিন না দিয়েই কার্পেটিং করে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। বীরমুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে বিটুমিন দিয়েছে, তা এখন শুকিয়ে গেছে। এখন কার্পেটিং করার সময় কোন বিটুমিন দেয়া হচ্ছেনা। ফিনিসিংও খুব খারাপ। মনে হচ্ছে এখনি কার্পেটিং উঠে যাবে।’ সড়কটি ২৮ ফিট পর্যন্ত প্রশস্ত করার কথা। এর মধ্যে কার্পেটিং হবে ১৮ ফিট। আর দুধারে ৫ ফিট করে মাটি থাকবে। কিন্তু দুধার প্রশস্ত করা হচ্ছেনা। কয়েকটি মোড়ে স্থাপনা থাকলেও তা অপসারণ করা হয়নি। ফলে যেকোন সময় দূর্ঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
জানতে চাইলে, নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রভাবে এবং লকডাউনের কারণে লেবার সংকট ও মালপত্র না পাওয়ায় ঠিকাদার ঠিকমত কাজ করতে পারেননি। ঠিকাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবছর জুন পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘১৮ ফিট কার্পেটিং এর পরে দুধারে তিন ফিট করে মাটি থাকবে। চুড়ান্ত বিল পরিশোধের সময় সিডিউল অনুযায়ী কাজ করা না হলে সে টাকা কর্তন করে বিল দেওয়া হবে।