সিনহা হত্যা মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
পিবিসি নিউজঃ কক্সবাজারের টেকনাফে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ২৫ অগাস্ট পর্যন্ত।
সোমবার সকাল পৌণে ১০টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় বলে জানান কক্সবাজার আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।
মামলায় স্বাক্ষ্যদানের জন্য ৮৩ জন স্বাক্ষীর মধ্যে প্রথম দফায় এই তিন দিনে স্বাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৫ জন স্বাক্ষীকে আদালতে উপস্থিত থাকতে সমন জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে মামলার বাদি ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের স্বাক্ষ্যদানের মধ্য দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়।
এর আগে সকালে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে কড়া পুলিশ পাহারায় ১৫ জন আসামিকে আদালতে আনা হয়।
গত ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই স্বাক্ষ্যদানের দিন ধার্য থাকলেও করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে যায়। পরে গত ১৬ অগাস্ট আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে ২৩, ২৪ ও ২৫ অগাস্ট স্বাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুল বলেন, আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে সিনহা হত্যা মামলার প্রথম দিনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। যা চলবে আগামী ২৫ অগাস্ট পর্যন্ত।
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর আবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
সেই সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদি হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করে।
সিনহা নিহতের ছয় দিন পর সাবেক পরির্দশক লিয়াকত আলী ও সাবেক ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন স্বাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। একপর্যায়ে পলাতক থাকা অবস্থায় টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
সর্বশেষ গত ২৪ জুন মামলার একমাত্র পলাতক থাকা আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করে। তাকে ছাড়া র্যাব ১৪ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন র্যাব ১৫-তে দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
মামলার আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, মোহাম্মদ মোস্তফা, এপিবিএনের তিন সদস্য- এসআই মোহাম্মদ শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী- নুরুল আমিন, নেজাম উদ্দিন, মোহাম্মদ আয়াজ, টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাবেক এএসআই সাগর দেব।