ডু অর ডাই, গণতন্ত্রের মুক্তি চাই : গয়েশ্বর
পিবিসি নিউজঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হতে হলে গণতন্ত্রের মুক্তি হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের আগামী দিনে পথ চলতে হবে- ডু অর ডাই, গণতন্ত্রের মুক্তি চাই। গণতন্ত্র মুক্ত করবো। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। আর তার পূর্বের শর্ত হচ্ছে সরকারের পতন। আর কোনো দাবির দরকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘সরকার নানা ভাবে ফাঁদে ফেলে ২০১৮ সালের মতো বিএনপিকে নির্বাচনের মতো মাঠে নামানোর চেষ্টা করবে। এখন বিএনপিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে তারা নির্বাচনে যাবেন কিনা। এ অবস্থায় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার কোনো উপায় নেই।’
শেখ হাসিনার পদত্যাগ জনগণের দাবি উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একটা পদত্যাগ যদি সব সমস্যার সমাধান হয় তাহলে প্রতিটি সমস্যা নিয়ে আমরা কেন আলাদা কথা বলবো।’
তিনি বলেন, ‘এক দফার আন্দোলনেই সুরাহা হবে। জনগণের আন্দোলন কখনোই বৃথা যায় না। আমাদের আন্দোলন জনগণের আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার। আমাদের আন্দোলন রাষ্ট্রের গণতন্ত্র ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার। আমাদের আন্দোলন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার। আমাদের আন্দোলন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘ঘরে বসে করোনায় না মরে রাজপথে গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়ে ইতিহাসের বুকে নিজের নামটা লিখে যাই।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান দেশে আসবে, আর সেদিন তো বিমানবন্দরে মানুষের জায়গা হবে না, এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। তারেক রহমানের নাম মাতৃকোলে শিশুর কানে পৌঁছে দিচ্ছে আমরা যতটা না, তার থেকে বেশি সরকার।’
আলোচনা সভায় উপস্থিত বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বরিশালের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয়, প্রশাসনের সাথে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ হয়েছে। এর আগে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল মামলা হয়েছে ইএনও ও ওসির নামে। আমি বিস্মিত হচ্ছি যে, আন্দোলন যখন চলছে তখন মনে হয়েছে প্রশাসনের এই লোকেরা আওয়ামী লীগের চেয়ে বড় ক্যাডার। তারা তো নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান কিন্তু এটা মনে হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা জানি যে প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। যদি সরকার অত্যাচারী হয় তাহলে প্রশাসনের কাছে বিরোধী দল শেষ আশ্রয়স্থল ও বিচারকের কাছে সঠিক বিচার পাবে। কিন্তু এখন সেই জিনিসটা পাওয়া দুরূহ ব্যাপার। একজন বিচারক সঠিক রায় দেয়ার কারণে তাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। আর প্রধানবিচারপতিকে বন্দুক ঠেকিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। আর নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান প্রশাসন তারা কোনো ভূমিকাই পালন করেনি। আজ আপনাদের (প্রশাসনের) ওপর আক্রমণ হচ্ছে, জনগণ নিরব ভূমিকা পালন করছে কারণ আপনাদের জনগণকে রক্ষা করার যে দ্বায়িত্ব তা পালন করেন নাই।’
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএস জিলানী, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন প্রমুখ।